নতুন ফেনী বিনির্মাণে ফেনীর একমাত্র ব্লগ, ফেনী তথা দেশের বিভিন্ন খবরা-খবর... , খসড়া

সত্য বলি , মিথ্যা পরিহার করি; * মৃত্যুর পরবর্তী জীবনকে চিন্তা করি * এ জীবনে বড়াই করার কিছু নেই * মানুষের জীবন একখানা বরফখন্ড ছাড়া কিছুই নয়;

১টি 'পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ'এর চিঠি

১টি 'পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ'এর অপরটি 'বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)এর
লিফলেট দুটি হুবহু (অপরিবর্তনীয়) নিম্নরূপ ঃ

বিছমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
''সর্বক্ষেত্রে বাঙ্গালিদের সাংবিধানিক অধিকার দিতে হবে"
পার্বত্য চট্টগ্রাম বাঁচাও
বাংলাদেশ বাঁচাও
প্রিয় সচেতন দেশবাসী
১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও তিন পার্বত্য জেলার ৫০৯৩ বর্গমাইল তথা বাংলাদেশের এক দশমাংশ আজ পর্যনত্দ স্বাধীনতার ছোঁয়া পায়নি।
মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে যারা পাকিসত্দানের পক্ষাবলম্বন করে রাজাকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল তারাই আজ স্বায়ত্বশাসনের নামে পার্বত্য অঞ্চলকে একটি খ্রিস্টান রাষ্ট্র বানাবার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় পার্বত্য অঞ্চলে খ্রিষ্টান মিশনারীরা প্রথমে হতদরিদ্র ও প্রানত্দিক জনগোষ্ঠীকে খ্রিষ্টান ধর্মে দীক্ষিত করলেও কালক্রমে তারা হাত দেয় নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে। পরিসংখ্যানে দেখা যায় শুধু রাঙ্গামাটির সাতটি উপজেলায় ২২টি গির্জা রয়েছে যার মধ্যে বাঘাইছড়ি উপজেলায় ৯টি। ভূ-কৌশলগত অবস্থানের দিক থেকে বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চল অত্যনত্দ গুরুত্বপূর্ণ। তাই পার্বত্য অঞ্চলকে ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব তিমুরের মত একটি খ্রিষ্টান রাষ্ট্রে পরিণত করতে একচ্ছত্রভাবে কাজ করে যাচ্ছে কিছু দেশী বিদেশী চক্র। একসময় চাকমা উপজাতিরা তাদের অধিকার আদায়ের কথা বলে আন্দোলন করলেও আজকে তাদের দাবি সম্পূর্ণ ভিন্ন। আজ তারা বিদেশী প্রভূদের কাঁধে ভর করে ১৯৯৭ সালের চুক্তি বাসত্দবায়নের নামে পার্বত্য অঞ্চলকে প্রকারানত্দরে বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে আলাদা করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। ইতোমধ্যে সরকারের কাছে এই সুদুরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেছে। তাই চাকমা উপজাতিদেরকে আদিবাসী উলেস্নখ না করতে সরকার গত ২৮ জানুয়ারি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মুজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত তিন পার্বত্য জেলায় এক প্রজ্ঞাপন প্রেরণ করেন। যার কিছু অংশ এখানে তুলে ধরা হলো- বিষয় উপজাতীয় সমপ্রদায়গুলোকে আদিবাসী হিসেবে অভিহিত করার অপতৎপরতা প্রসঙ্গে। সূত্র-প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পত্র নং ২২.০৯.১.০.০.২৪ (অংশ ৮) ৭৯৯ গোপনীয় প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়েছে, ''বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান, বিদেশী সংবাদ মাধ্যম, জাতিসংঘের আড়ালে থাকা খ্রিষ্টান রাষ্ট্রসমূহ এ সকল ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় তাদেরকে একটি পৃথক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সহায়তায় অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে বসবাসকারী অধিকাংশ উপজাতীয় সমপ্রদায় এখন নিজ নিজ ধর্ম সংস্কৃতিতে অবস্থান না করে তাদের অনেকেই খ্রিষ্টান হয়ে গেছে। ইউএনডিপি, ডানিডা, এডিবিসহ আনত্দর্জাতিক সংস্থাসমূহ পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় কোটি ডলার বিনিয়োগ এবং উপজাতীয়দের ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তাছাড়া আমাদের দেশের অনেক বুদ্ধিজীবি বিভিন্ন সেমিনার সিম্পোজিয়াম ও ওয়ার্কশপে এবং সাংবাদিকরা বিভিন্ন লেখায় উপজাতীয়দের আদিবাসী হিসেবে চিহ্নিত করছে। এরূপ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলে উপজাতীয়দের ভবিষ্যতে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া আবশ্যক হয়ে পড়বে। ''প্রসঙ্গ হল, উপজাতি না আদিবাসী নামের এই বিতর্ক কেন? কারণ উপজাতি থেকে নাম পরিবর্তন করে আদিবাসী করার প্রক্রিয়া হল এ অঞ্চলকে খ্রিষ্টান রাষ্ট্র করার প্রথম পদক্ষেপ। উলেস্নখ্য, জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক সনদে উল্লেখ রয়েছে, জাতিসংঘভূক্ত কোন দেশে যদি আদিবাসীদের উপর অত্যচার করা হয় অথবা কোনভাবে যদি তাদের মানবাধিকার লংঘন করা হয় তাহলে জাতিসংঘ বিনা বাধায় সেই দেশের উপর হসত্দক্ষেপ করতে পারবে। আর জাতিসংঘের মূল খরচের শতকরা ২৫শতাংশ প্রদান করে পৃথিবীর মোড়ল নামে খ্যাত খ্রিষ্টান অধু্যষিত দেশ আমেরিকা।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা বঙ্গবন্ধুর কাছে পার্বত্য অঞ্চলের স্বায়ত্বশাসন দাবি করলে তিনি তা নাকচ করে দিয়ে মানবেন্দ্রকে বাঙ্গালি হওয়ার জন্য বলেন। এরই ফলশ্রুতিতে ১৯৭৩ সালের ১৬ মার্চ এম.এন লারমা এ দলটি গঠন করেন। ১৯৭৫সাল থেকে তারা সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করে যার সামরিক শাখার নাম ছিল শানত্দিবাহিনী। বস্তুতপক্ষে, শানত্দিবাহিনী নাম দিয়ে কার্যক্রম শুরু করলেও হত্যা, লুণ্ঠন, চাঁদাবাজিসহ এমন কোন অশানত্দির কাজ নেই যে তারা করেনি। ১৯৮৩ সালের ১০ নভেম্বর এম.এন লারমা আনত্দকোন্দলের জের ধরে ভারতের একটি গ্রামে নিহত হন। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে তিনি ভারতে কেন নিহত হলেন। এ প্রশ্নের পূর্ণাঙ্গ জবাব খুজে পাওয়া যায় বিবিসির কলকাতা প্রতিনিধি সুবির ভৌমিকের লেখা "দি ট্রাবল পেরিফেরি" গ্রন্থে। ''পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি পার্বত্য অঞ্চলের জন্য ব্যাপক স্বায়ত্বশাষন চেয়েছিল। অসহানুভূতিশীল আওয়ামী লগ সরকারের কাছে স্বায়ত্বশাসন লাভে ব্যর্থ হয়ে পিসিজেএসএস'র চরমপন্থীরা গেরিলা যুদ্ধের পথে পা বাড়াতে সংকল্পবদ্ধ হয়। বরাবরই দলটির একটি সামরিক শাখা ছিল যা আওয়ামী লীগের (যে দলের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল) ছিল না। ১৯৭১ সালের যুদ্ধে পাকিসত্দানি সৈন্যদের ফেলে যাওয়া অস্ত্রশস্ত্রে সমুদ্ধ ছিল শানত্দিবাহিনী। ১৯৭৬ সালের মাঝা মাঝি প্রথম ব্যাচের শানত্দিবাহিনী নেতারা দেরাদুনের কাছে একটি সামরিক ঘাঁটিতে প্রশিক্ষণ শেষ করেন। গেরিলা যোদ্ধাদের আরো বৃহত্তম ব্যাচ আসামের হাফলংয়ে প্রশিক্ষণ শেষ করে। ১৯৭৯ সালের শেষ নাগাদ ভারত শানত্দিবাহিনীর ৭০০ গেরিলাকে প্রশিক্ষণ দেয়। শানত্দিবাহিনীর একজন সাবেক সেক্টর কমান্ডার শুদ্ধপ্রিয় চাকমা ওরফে মেজর রক্সি কলেন, 'ভারতীয় প্রশিক্ষণ ছিল ব্যাপকভিত্তিক'। সুবীর ভৌমিক আরো লিখেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমগ্র উপজাতীয় জনগোষ্ঠী একটি মুসলিম রাষ্ট্রের অংশ হওয়ার চেয়ে ভারতের অংশ হতে বেশী আগ্রহী ছিল। এম.এন লারমা নিহত হওয়ার পর দলটির দায়িত্ব গ্রহণ করে সন্তু লারমা এবং তারপর থেকেই ভারতের নির্দেশে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে শুরু হয় তার বাঙ্গালি নিধন অভিযান। ভূষণছড়া গণহত্যা (৪১৫ জন) পাকুয়াখালীর ৩৫ কাঠুরিয়া হত্যাসহ ৩০ হাজার নিরীহ বাঙ্গালী হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে তিনি পুরস্কার পান আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান তথা প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন সরকারের সাথে রাজনৈতিক সমঝোতায় আসেন সন্তু লারমা। এরপর থেকে আজ অবধি তিনি চুক্তি বাসত্দবায়নের জন্য পৃথিবীর ক্ষমতাধর দেশগুলোর শরণাপন্ন হয়ে সরকারের উপর বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে আসছেন। সমপ্রতি খাগড়াছড়ি ঘটনায় বাংলাদেশের আভ্যনত্দরীন ব্যাপারে কলকাতায় সাংবাদিক সম্মেলন করে সন্তু লারমা কি বাংলাদেশের উপর ভারতের হসত্দক্ষেপ কামনা করেছেন কিনা সেটা আমাদের বোধগম্য নয়।
ইউপিডিএফ ঃ
ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রটিক ফ্রন্ট বা ইউপিডিএফ ১৯৯৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতা প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বে শানত্দিচুক্তি বিরোধী সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এখন তারা জেএসএস'র সাথে সুর মিলিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বায়ত্বশাসনের দাবিতে আন্দোলন করছে। বর্তমানে এই সশস্ত্র দলটিই পার্বত্য অঞ্চলে সকল অরাজকতা সৃষ্টির জন্য দায়ী। চুক্তির কারণে কাগজে কলমে জনসংহতি সমিতির হাতে কোন অস্ত্র না থাকায় (যদিও মাঝে মাঝে জেএসএস এবং ইউপিডিএফ'র মধ্যে গোলাগুলি হয়) বিদেশীরা পার্বত্য অঞ্চলকে অশানত্দ করতে বর্তমানে ইউপিডিএফকে ব্যবহার করছে। তাদের প্রধান আয়ের উৎস হল চাঁদাবাজি এবং অপহরণ বাণিজ্য। সরকারী প্রশাসনের হিসাবমতে তারা প্রতিবছর বাঙ্গালীদের কাছ থেকে ১২০ কোটি টাকা চাঁদা আদায় করে। কিন্তু অবৈধ টোল আদায়ের মাধ্যমে তাদের আয় অনুমানের দশগুণ (দৈনিক ইনকিলাব ১০ মার্চ ২০১০)
বিদেশী সংস্থার ভূমিকা
পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অর্থ সহায়তা দিয়ে উৎসাহিত করে আসছে যে প্রতিষ্ঠানটি তার নাম ইউএনডিপি। পার্বত্য চট্টগ্রামের অর্ধেক জনগোষ্ঠী বাঙ্গালী হলেও তাদেরকে কোন উন্নয়ন কার্যক্রমে অনত্দর্ভূক্ত করা হয় না। জাতিগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন নামে একটি বিতর্কিত প্রকল্পের বিভিন্ন কর্মশালার মাধ্যমে চাকমাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা হয়। এসব কর্মশালয় বোঝানো হয় পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার জন্য বড় বাধা সেনাবাহিনী এবং বাঙ্গালি। তাই এখান থেকে সেনাবাহিনী এবং বাঙ্গালিদের তুলে নিতে হবে। সমপ্রতি ইউএনিিডপি বান্দরবানে হেডম্যান কার্বারীদের নিয়ে এক গোপন বৈঠক করে। বৈঠক চলাকালে কোন সংবাদকর্মীকে ঢুকতে দেয়া হয়নি। একটি স্বাধীন দেশের আভ্যনত্দরীন ব্যাপারে ইউএনডিপি তিন জেলায় পৃথক ৩টি বৈঠক করে। জাতিগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন প্রকল্প মূলত বাঙ্গালিদের সাথে চাকমাদের বিভেদকে উসকে দিচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রম নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আরেক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম আনত্দর্জাতিক কমিশন। কমিশনের প্রধান লর্ড এরিক অ্যাভবুরি নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল পার্বত্য চট্টগ্রাম ঘুরে এসে একটি রিপোর্ট প্রদান করে। কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে "পার্বত্য তিন জেলা থেকে সেনা প্রত্যাহার, অভিবাসী বাঙ্গালিদের সরিয়ে এনে সেখানে পাহাড়িদের পুনর্বাসন, চুক্তি অনুযায়ী পাহাড়ী প্রধান স্থানীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হসত্দানত্দর এবং পাহাড়িদের ভূমির মালিকানার বিষয়টি ল্যান্ড কমিশনের মাধ্যমে নিশ্চিত করার সুপারিশ করে। পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাঙ্গালিরা স্বেচ্ছায় চলে আসতে না চাইলে তাদেরকে রেশনসহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা সরকারেকে বন্ধ করে দিতে বলেছে কমিশন।" পার্বত্য চট্টগ্রাম আনত্দর্জাতিক কমিশনের প্রধান কে এই লর্ড এরিক অ্যাভবুরি? ব্রিটিশ লর্ড সভার সদস্য লর্ড এরিক অ্যাভবুরি ইন্দোনেশিয়ার কাছ থেকে পূর্বতিমুর আলাদা করার সেই খলনায়ক। যিনি পার্বত্য এলাকা নিয় একই কায়দায় অগ্রসর হচ্ছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য পৃথক পতাকা ব্যবহারের মাধ্যমে হঠাৎ করে পাহাড়িদের জন্য আলাদা ভূখন্ড প্রতিষ্ঠার প্রচারণা শরু হয়। ইউএনপিও'র ওয়েবসাইটে পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমাদের জন্য লাল ও সাদা রং সম্বলিত আয়তাকার একটি পতাকার ছবি দেয় হয়েছে। প্রতিনিধিত্বহীন জাতি ও জনগোষ্ঠী হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামকে এতে তুলে ধরা হয়েছে। উলেস্নখ্য, স্বাধীন হওয়ার আগে পূর্বতিমুরও এই সংগঠনের সদস্য ছিল। ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, "পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার ও অভিবাসী বাঙ্গালীদের সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আনত্দর্জাতিক সমপ্রদায়কে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। পুরো পার্বত্য চট্টগ্রামে পূর্ণ স্বায়ত্বশাসনের বিষয়টি এখানো নিষ্পত্তি করা হয়নি। " বিদেশী এনজিওদের ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এমিরেটাস ড. জামাল নজরম্নল ইসলাম কালের কণ্ঠকে দেয়া একানত্দ সাক্ষাৎকারে বলেন, 'পিস্নজ আপনারা চলে যান। আমাদেরকে আত্মনির্ভরশীল হতে দেন। ভিক্ষাবৃত্তি সংস্কৃতি থেকে মুক্তি চাই'। বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদও এই নীতিতে অটল ছিলেন। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ মনে করছেন, পার্বত্য অঞ্চলের এই সমস্যার জন্য বিদেশী সংস্থাগুলোই প্রধান দায়ী। তিনি তাদেরকে বাংলাদেশের আভ্যনত্দরীন ব্যাপারে নাক না গলাবার জন্য বলেছেন।
বাংলাদেশের উপর আধিপত্য বিসত্দারের জন্য ভারত রাজনৈতিক কারণে চাকমাদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছে। চীন, জাপানসহ অন্যান্য বৌদ্ধ অধু্যষিত দেশগুলো ধর্মীয় অনুভূতির কারণে সহযোগিতা করলেও প্রকৃতপক্ষে চাকমারা গৌতম বৌদ্ধের পঞ্চশীলে বিশ্বাস করে না। পঞ্চশীলের উলেস্নখযোগ্য দুটি ধারা হলো মধ্যপান হারাম ও জীব হত্যা মহাপাপ। অথচ এই দুটি কাজ দিয়েই শুরু হয় তাদের নিত্যদিনের কর্মসূচী। সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপারটি হচ্ছে জাতিসংঘের সাহার্য্যের নামে হসত্দক্ষেপ এবং খ্রিষ্টান মিশনারীর কার্যকলাপ। শানত্দিচুক্তি এবং আদিবাসী শব্দ দুটিকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করে পৃথিবীর খ্রিষ্টান দেশগুলো পার্বত্য চট্টগ্রামকে একটি খ্রিষ্টান রাষ্ট্র বানিয়ে পরবর্তী বিশ্ব নেতৃত্বদানকারী দেশ হিসেবে চীন এবং ভারতকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়।
রাজনৈতিক দলগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি
মিয়ানমারের সীমানত্দবর্তী চীনের ইউনান প্রদশে থেকে বিতাড়িদত, মুক্তিযুদ্ধের সময় চীনের হয়ে পাকিসত্দানের পক্ষাবলম্বনকারী রাজাকারগোষ্ঠী উপজাতিরা একময় বাংলাদেশের ক্যান্সার হতে পারে এটি ভালভাবেই অনুধাবন করতে পেরেছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান তার দূরদর্শি মেধা দিয়ে বুঝতে পেরেছিলেন যে, পার্বত্য অঞ্চলে যদি পাহাড়ি বাঙ্গালি জনসংখ্যার ভারসাম্য রক্ষা করা না যায় তাহলে অদূর ভবিষ্যতে এটি বাংলাদেশের অংশ থাকবেনা। প্রয়াত এই দুই জাতীয় নেতাই পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সিদ্ধানত্দ নিলেও পরবর্তী সরকারগুলো অর্থাৎ তাদের উত্তসূরিরা এর ধারাবাহিকতা বজায় না রাখায় আজকের এই দূর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি পার্বত্য অঞ্চলে তাদের সংসদীয় আসন সংরক্ষিত রাখতে অর্ধেক জনগোষ্ঠী বাঙ্গালীদেরকে উপেৰা করে উপজাতীয়দের মনোনয়ন দিয়ে আসছে। (যদিও দুই দলেই মিছিল, সভা সমাবেশ এবং মামলা হামলার শিকার হয় বাঙ্গালিরাই্) ১৯৯৮ সালে বিএনপি জামাত চুক্তির বিরোধীতা করে লং মার্চ করলেও তারা তাদের পাঁচ বছরে চুক্তি নিয়ে কোন উলেস্নখযোগ্য পদৰেপ গ্রহণ করেনি। ]
ৰমতাসীন উপজাতিদের ভূমিকা
বাঙ্গালীদের ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা উপজাতি হওয়ায় পার্বত্য এলাকার বাঙ্গালীদের মানবেতর জীবন যাপন, দুঃখ দুর্দশা এবং বঞ্চনার কথা সরকার পর্যনত্দ পৌঁছায় না। মূলত তারা যে দল থেকেই নির্বাচন করম্নক না কেন পার্বত্য এলাকার ব্যাপারে তাদের দাবি এক ও অভিন্ন। যদি তাই না হবে তাহলে বিএনপি থেকে নির্বাচিত সাংসদ মনিস্বপন দেওয়ান কিভাবে বলেন, ইন্দোনেশিয়া আদিবাসীদের জন্য পূর্বতিমুর ছাড়তে পারলে বাংলাদেশ পার্বত্য এলাকা ছাড়তে পারবেনা কেন? একই সুরে দীপংকর তালুকদার বলেন, 'বাঙ্গালিদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া উচিৎ।' সেই হিসেবে তার সংসদ সদস্যপদের আর আইনগত বৈধতা থাকে না। কারণ তার প্রাপ্ত ভোটের অর্ধেকই বাঙ্গালি ভোট। গত বিএনপি আমলের উপমন্ত্রী মনিস্বপন দেওয়ানই ভূষনছড়া গণহত্যায় নেতৃত্ব দেয়া সেই মেজর রাজেশ। যার নেতৃত্বে ১৯৮৬ সালের ৩১ মে গভীর রাতে ভূষণছড়ায় আগুন দিয়ে ৪১৫ জন বাঙ্গালীকে হত্যা করা হয়। খাগড়াছড়ি জেলা থেকে নির্বাচিত সাংসদ যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা সাবেক শানত্দিবাহিনীর পঞ্চায়েত (শালিশি/বিচার) কমিটির সভাপতি এবং জেএসএস'র সহসভাপতি ছিলেন। যেখানে তার ছদ্মনাম ছিল নির্মল। তার এক নিকটাত্মীয় ইউএনডিপি'র উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। সুতরাং তার কাছ থেকে বিচ্ছিন্নতাবাদকে উৎসাহিত করা ছাড়া আর কিইবা আশা করতে পারে জাতি। বাঘাইহাট এবং খাগড়াছড়ির ঘটনায় অদৃশ্য নেতৃত্ব দিয়ে আসছে এই সকল পদ দখলকারী উপজাতিরা। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে, সরকারের দুই প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার এবং যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা অর্ধশত বিদেশী দাতা গোষ্ঠী ও এনজিও সংস্থার গাড়ি নিয়ে গঙ্গারামমুখ ৰতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনে যান। সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ লাঠি মিছিলের নামে অস্ত্র মিলি করলেও প্রশাসনের নীরব ভূমিকা সবাইকে হতবাক করেছে। শুধু তাই নয় তারা পার্বত্য এলাকায় কর্মরত সরকারী কর্মকর্তা, কর্মচারীদের উপর মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছেন। এজন্য সব সময় বদলি এবং ওএসডি আতঙ্কে থাকেন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। যার সুস্পষ্ট প্রমাণ প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদারের গাড়িবহরে থাকা অবস্থায় ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের হাতে লাঞ্চিত হন বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ন কবীর। শুধু লাঞ্চিত করে ৰানত্দ হয়নি তারা বরং তাকে প্রত্যাহার করতে সরকারকে রীতিমত বাধ্য করেছে। পার্বত্য বাঙ্গালিদেরকে জাতীয় রাজনীতির নামে ত্রিধাবিভক্ত করে একতরফা ফায়দা লুটে নিচ্ছে উপজাতীয় ৰমতাধর ব্যক্তিরা।
সেনাক্যাম্প প্রত্যাহারের মাধ্যমে সরকার এতদঅঞ্চলের অর্ধেক জনগোষ্ঠী বাঙ্গালিসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শানত্দিকামী উপজাতিদের নতুন করে নিরাপত্তাহীনতার দিকে ঠেলে দেয়। ২৬ ফেব্রুয়ারী প্রথম আলো জনমত জরিপে ৭৮.৪১ শতাংশ মানুষ মনে করে পার্বত্য এলাকা স্থিতিশীল রাখতে আরো অধিক পরিমাণ সেনা মোতায়েন করা দরকার। সমসত্দ বিদেশী সংস্থাগুলো যখনি বুঝতে পারল তাদের উদ্দেশ্য বাসত্দবায়নে প্রধান অনত্দরায় হল বাঙ্গালিরা। কারণ চাকমাসহ অন্যান্য উপজাতিরা সময়ের ব্যবধানে খ্রিষ্টান হলেও বাঙ্গালিরা কখনোই তাদের স্বধর্ম ত্যাগ করবে না। এজন্য তারা এক ফমর্ূলা দিল যে, এখান থেকে বাঙ্গালি তাড়াতে হবে। বাঙ্গালি তাড়াবার ব্যাপারে প্রধান বাধা হিসবে দেখল সেনাবাহিনীকে। তখনি তারা চাকমাদের হাতে নতুন এক এজেন্ডা ধরিয়ে দিল, যেকোন প্রকারেই হোক সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করতে হবে। আর সেই কাজটি অত্যনত্দ সূচারম্নভাবে করতে সহযোগিতা প্রদান করল এদেশীয় বুদ্ধিজীবি, কিছু মিডিয়া এবং নামে বেনামে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন। প্রিয় দেশবাসী , আমার দেশের সেনাবাহিনী যেখানে জাতিসংঘ শানত্দিরক্ষী মিশনে অত্যনত্দ সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছে তারা কি নিজ দেশে শানত্দি রক্ষায় ব্যর্থ? নগর পুড়িলে দেবালয় কি এড়ায়' ভারতচন্দ্র রায়ের এই বিখ্যাত উক্তি সত্যিই অখন্ডনীয়। কারণ বাঘাইহাটে যখন শত শত বাঙ্গালি ও পাহাড়ি ঘর পুড়েছে তখন সেখানে মসজিদ, প্যাগোডা পুড়বে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, চাকমাদের প্যাগোডা নিয়ে কিছু মিডিয়া ফলাও করে প্রচার করে বিশ্ববিবেক, বিশ্ব মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছে। আরো আশ্চর্যজনক সংবাদ হল পার্বত্য এলাকার ঘটনা বাংলাদেশ সরকার জানার আগেই বিদেশী প্রভুদের কাছে চলে যায়। দিগনত্দ টেলিভিশনের পার্বত্য বিষয়ক ধারাবাহিক দশ পর্বের ২য় পর্বে মহিম মিজান দেখিয়েছেন কিভাবে তারা আনত্দর্জাতিক ধর্মীয় সহানুভূতি আদায় করে। দেখা যায়, সরকারি বন্দোবসত্দকৃত বাঙ্গালি গুচ্ছগ্রামগুলো জ্বালিয়ে দিয়ে তারা প্যাগোডা এবং ভাবনাকেন্দ্রের নামে সশস্ত্র কার্যক্রম পরিচালনা করে। বাঙ্গালিরা যখনি আবার তাদের পূর্বের জায়গা দখল করতে চায় ঠিক তখনি তারা দেশীয় এবং বিশ্বমিডিয়াতে তাদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আঘাত করা হয়েছে বলে হইচই ফেলে দেয়। আর এ সমসত্দ খবরগুলো ছাপিয়ে পার্বত্য বাঙ্গালিদের ব্যাপারে দেশবাসীকে ভুল ধারণা প্রদান এবং চাকমাদের জন্য জাতীয় সহানুভূতি আদায় করতে কিছু মিডিয়া একপায়ে খাড়া। সরকারী খাস ভূমি দখলের এক নয়া কৌশল হিসেবে তারা ভাবনাকেন্দ্রের নামে হাজার হাজার একর ভূমি দখল করছে। কথিত প্রবাদ আছে, 'একজন চাকমা একটি দিয়াশলাই'র কাঠির মাধ্যমে যতটুকু পাহাড় পুড়তে পারে ততটুকুই তার নিজের বলে গণ্য হবে। ' গঙ্গরামমুখ ক্ষতিগ্রস্থ উপজাতিরা দফায় দফায় ৩৩টি এনজিও'র কাছ থেকে ত্রান সহায়তা পেলেও ক্ষতিগ্রস্থ উপজাতিদের অনেকেই সাংবাদিককে জানিয়েছে, সরকারের নামমাত্র ত্রান আমাদের প্রয়োজন নেই, এটা বাংলাদেশ নয়। সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এল থাঙ্গার ভাষ্যমতে, "চাকমারা নিজেদের ঘর নিজেরা পুড়িয়ে বাঙ্গালিদের দোষ দিচ্ছে"। এই অভিনব কৌশলের কারণে এক ঢিলে দুই পাখি মারা যাচ্ছে। একদিকে বিদেশী সংস্থার কাছ থেকে ক্ষতির চাইতে দশগুন বেশি ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাচ্ছে এবং অন্যদিকে এই পোড়া ভিটাকে রাজনৈতিক ইসু্য করে দেশীয় এবং বিশ্বমিডিয়ায় হইচই ফেলা যাচ্ছে। গঙ্গারামমুখ বাঙ্গালিদের পোড়া ভিটায় ঘরবাড়ি বানিয়ে এবং মসিজদ ও কবরস্থানের ওপর প্যাগোডা নির্মান করলেও যেন দেখার কেউ নেই। হায়! সেলুকাস বাংলাদেশ, পার্বত্য এলাকা যেন এক মগের মূলস্নুক।
বাম সংগঠনগুলোর মেনিফেস্টোতে শুধু নৃতাতি্বক গোষ্ঠীর অধিকার আদায়ে সোচ্চার হবেন শুধু এমনটিই উলেস্নখ নাই বরং সাম্রাজ্যবাদ, উপনিবেশিকতাবাদের বিরম্নদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলবেন এটাও উলেস্নখ আছে। আশা করি বাম সংগঠনগুলো নব্য সাম্রাজ্যাবাদ ও নব্য ঔপনিবেশিকতাবাদের বিরম্নদ্ধে সোচ্চার হয়ে দেশকে অখন্ড রাখতে সাহসী ভূমিকা পালন করবেন। আপনাদের সহানুভূতি এবং সংবেদনশীলতা যেন মাত্রারিতিক্ত হয়ে না যায় যাতে করে তারা আরো বেশি বিচ্ছিন্নতাবাদে উৎসাহিত হয়ে পড়ে।
চিারপতি খাদেমূল ইসলামের নেতৃত্বে ভূমি কমিশনের বৈঠকে উপস্থিত না হয়ে সন্তু লারমা এবং দেবাশীষ রায় বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসন ব্যবস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন। চুক্তির আলোকে এবং প্রথাগত আইনে তারা ভূমি কমিশনের ১৯টি ধারা পরিবর্তন করে ভূমি জরিপ করার দাবি জানিয়েছে। তাদের কথা অনুযায়ী প্রথাগত আইনে ভূমি জরিপ করা এবং এ অঞ্চল থেকে বাঙ্গালি তাড়িয়ে দেয়ার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। এযেন সেই চিরচেনা প্রবাদের মত, বিচার মানি তবে তালগাছ আমার। উলেস্নখ্য বাংলাদেশের ৬১ জেলায় সরকারীভাবে ভূমি জরিপ হলেও তিন পার্বত্য জেলায় তা হয়নি। সার্কেল চীফ (রাজা), হেডম্যান এবং প্রথাগত সামনত্দতান্ত্রিক নিয়ম বাতিল করে পার্বত্য অঞ্চলে বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার মত এক দেশ এক নীতি' প্রতিষ্ঠা কর ার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই।
চাকমা রাজা ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়ের বাবা ত্রিদিব রায়ের নেতৃত্বে ৯৫ শতাংশ উপজাতি মুক্তিযুদ্ধে রাজাকারের ভূমিকায় অবর্তীর্ণ হয়। রাজাকারগিরি করার কারণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শাসত্দিস্বরূপ তার নাগরিকত্ব বাতিল করেন। আর পাকিসত্দান সরকার পুরস্কার স্বরূপ পৃথিবীর বেশ কয়েকটি দেশে তাকে রাষ্টদূত করে পাঠিয়েছেন। বর্তমানে তিনি পাকিসত্দানের লাহোরে অবস্থান করছেন।
গত ১৪ এপ্রিল মহামান্য হাইকোর্ট পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে। বস্তুতপক্ষে পার্বত্য অঞ্চলের বাঙ্গালীরা দীর্ঘদিন সেই পর্বতসম বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে এই রায়ের মাধ্যমে তার স্পষ্ট প্রতিফলন ঘটেছে। উপরোক্ত আলোচনায় এটা স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়ে যে, ভিণ্ন রাজনীতি হলেও সকল উপজাতির লক্ষ্যবিন্দু এক। বিদেশী সংস্থা যে নামেই আসুন না কেন সবার কণ্ঠে একই সুর। সকল উপজাতি, বিদেশী দাতা সংস্থা এবং এনজিও মিলে নতনু এক সুর সৃষ্টি করে যেন বলে, 'স্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম চাই"।
স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির হাতে নিহত ৩০ হাজার বাঙ্গালীসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের শহীদের মর্যাদা প্রদান করতে হবে। তাদের পরিবারদেরকে পুনর্বাসন করতে হবে। অপরদিকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে সন্তু লারমা, ব্যারিস্টা দেবাশীষ রায়ের বাবা ত্রিদিব রায় এবং তাদের দোসরদের যুদ্ধাপরাধের তালিকায় অনত্দর্ভূক্ত করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ ১৯৯১ সাল থেকে পার্বত্য অঞ্চলের অধিকারহারা বাঙ্গালীদের সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন করে আসছে। কিন্তু উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ছাত্র পরিষদের আন্দোলন দেশ বাঁচাবার আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর আমরা অনেকবার স্মারকলিপি প্রদান করেছি। ২৯ জুলাই সেনাক্যাপম্প প্রত্যাহারের ঘোষণার পর থেকেই ছাত্রপরিষদ তার নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে সেনাক্যাম্প পুনর্বহালের দাবি জানায়। সেনাক্যাম্প প্রত্যাহারের কারণেই বাঘাইহাট এবং খাগড়াছড়ির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের। উক্ত ঘটনায় ছাত্র পরিষদের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এয়াকুব আলী চৌধুরীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রতিষ্ঠাতা কেন্দ্রীয় সভাপতি ও পার্বত্য নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যন আলহাজ্ব আলকাছ আল মামুন ভূইয়া ও বর্তমান কেন্দ্রীয় সভাপতি আলমগীর কবিরকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। আমরা এয়াকুব আলী চৌধুীর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং আলকাছ আল মামুমন ভূইয়া এবং আলমগীর করিবরসহ সকল নেতাকর্মীদের হয়ারানি বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, বিখ্যাত রাষ্টবিজ্ঞানী মন্টেস্কু বলেছেন, 'পার্বত্য ভূমি স্বাধীনতার অনুকুলে নয়'। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং অখন্ডতা রক্ষায় সরকারকে যেকোন ধরনের সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত। বিদেশী সংস্থাগুলোর ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন, বাঙ্গালীদের সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়া এবং উপজাতিদের বিশেষ সুবিধার নামে দুধ কলা দিয়ে সাপ পোষা বন্ধ করলেই এ সমস্যার সমাধান হতে পারে। শিক্ষা, চাকুরি, রাজনীতি, অর্থনীতি সকল ক্ষেত্রে চাকুরীজীবি চাকমাদেরকে সমতলে বদলি করে তদস্থলে সতল থেকে বাঙ্গালি নিয়োগ করা যেতে পারে। কারণ সরকারী পদে আসীন এই সকল চাকমারা বিচ্চিন্নতাদাবীদের অর্থসহ সবধরনের সহায়তা দিয়ে আসছে ইউএনডিপি যদি সুষম উন্নয়ন না করে বৈষম্যমূলক উন্নয়নের মাধ্যমে পাহাড়ি বাঙ্গালিদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি অব্যাহত রাখে তাহলে পার্বত্য অঞ্চলের সকল বাঙ্গালিকে সাথে নিয়ে ইউএনডিপি'র কার্যক্রমের বিরম্নদ্ধে তুমূল প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ
প্রচারে ঃ কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা বিভাগ কর্তৃক সম্পাদিত এবং প্রচার বিভাগ কর্তৃক প্রচারিত।





বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
২৩ জানুয়ারী ২০১০
সাজেক ইউনিয়নের বাঘাইহাট ও গঙ্গারাম এলাকায় নিরীহ জনগণের উপর সেনা নির্যাতন ও জিনিষপত্র লুটপাটের ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত
রাঙ্গামাটি জেলার সাজেক ইউনিয়নের বাঘাইহাট ও গঙ্গারাম এলাকায় গত ২১ জানুয়ারী ২০১০ সেনাবাহিনী কর্তৃক নিরীহ জনগেণর উপর নির্যাতন ও জিনিষপত্র লুটপাটের ঘটনার প্রতিবাদে আজ ২৩ জানুয়ারী ২০১০ সকাল ১১.০০ টায় খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন এর যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিলটি জেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শাপলা চত্বরে এক সমাবেশে মিলিত হয়। উক্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি রেমিন চাকমা, হিল ইউমেন্স ফেডারেশন-এর জেলা শাখার সভাপতি রিকু চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আপ্রুসি মারমা।
বক্তারা বলেন, গত ২১ জানুয়ারী ২০১০ বাঘাইহাট জোনের ওয়ারেন্ট অফিসার রেজাউলের নেতৃত্বে একদল সেনা সাজেক ইউনিয়নের বাঘাইহাট ও লাদুমনি বাজার নামক স্থানে এক তান্ডবলীলা চালায়। তারা প্রথমে দুপুর আনুমানিক ১২.৩০ টার সময় বাঘাইহাট বাজারে ওয়াল্ড ফুড-এর চাল নিতে আসা দু'ব্যক্তিকে আটক করে। এরা হলেন, ১. কালাবিজা চাকমা(৩৭) পিতা-ফকিরা চাকমা, গ্রাম-রেতকাবা, ২. কর্ণময় চাকমা(২৫) পিতা-মনাধন চাকমা, গ্রাম-ঐ। এ সময় সেখানে অবস্থানরত স্থানীয় জনগণের প্রতিরোধের মুখে সেনারা তাদেরকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হলেও বিকাল আনুমানিক ৪.১৫ টার সময় সেনারা আবারও বাঘাইহাটের লাদুমনি বাজার নামক স্থানে হানা দেয়। এ সময় তারা এলাপাথাড়িভাবে নিরীহ জনগেণর উপর মারধর করে। এতে অনত্দত ১০ জন আহত হয়। আহত কয়েকজন হলেন, ১. জ্ঞানময় কার্বারী (৪৫), ২. জ্ঞানেন্দু চাকমা(৫৫), ৩. বিন্দু চাকমা (৪৮), ৪. রাজনা বাপ (৪২), ৫. শানত্দি বিমল চাকমা (৩২), ৬. ছাড়নি বাপ (৩৭), ৭. অনাদি রঞ্জন চাকমা (৪৫), ৮. লুজোমুখি চাকমা(৪৫)। সেনাদের বেপরোয়াভাবে মারধর সহ্য করতে না পেরে স্থানীয় নারীরা এতে প্রতিবাদ করেন। নারীদের প্রতিবাদের মুখে সেনারা সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য হয়। এরপর আবারও সন্ধ্যার সময় সেনারা রেতকাবা মুখ দোকানে হানা দিয়ে নিরীহ জনগণকে বেদম মারধর করে। এতেও ক্ষানত্দ না হয়ে সেনারা ২১ জানুয়ারী রাতে সেটলার বাঙালিদের সাথে নিয়ে গঙ্গরাম মুখ -এ অবস্থিত পাহড়িদের গ্রামে হানা দেয় এবং বাড়িতে রাখা চাল, কাপড়-চোপড়সহ সকল জিনিষপত্র লুট করে নিয়ে যায়।
বক্তারা আরো বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার একদিকে তথাকথিত পার্বত্য চুক্তি বাসত্দবায়নের কথা বলে জনগণকে বিভ্রানত্দি করছে অপরদিকে সেনা নির্যাতন বৃদ্ধি করে পাহাড়িদের ভূমি বেদখলের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে পাহাড়ি জনগণকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র করছে। বিগত ২০০৮ সালের ২০ এপ্রিল পাহাড়িদের উচ্ছেদের লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে সেটলার বাঙালিদের সামপ্রদায়িক উস্কানি দিয়ে সাজেক ইউনয়িনের ৪টি পাহড়ি গ্রামে হামলা চালানো হয়েছিল। একই উদ্দেশ্যে উপরোক্ত ঘটনা সংঘটিত করা হয়েছে বলে বক্তারা উলেস্নখ করেন।
বক্তারা বলেন, সাজেক এলকা থেকে অনুপ্রবশেকারী বাঙালিদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়া, সাজেকে সেনা নির্যাতন বন্ধ করা , গাড়ীতে তলস্নাশির নামে যাত্রী হয়রানি বন্ধ করা, সাজেকে ভূমি সমস্যায় সেনা হসত্দক্ষেপ ও সেনাশাসন বন্ধ করা, পূর্ব পাড়ায় সেটলার বাঙালি কর্তৃক বেদখলকৃত ভূমি ফেরত দেয়াসহ কয়েকটি দাবিতে এলাকার জনগণ গত ১৮ জানুয়ারি ২০১০ হতে বাঘাইহাট বাজার বয়কট কর্মসূচী পালন করছে। উপরোক্ত দাবিসমূহ বাসত্দবায়ন না করে জনগণের বাজার বয়কটি কর্মসূচী বানচাল করে দেয়ার লক্ষ্যেই সেনারা এ ধরনের নিপীড়ন চালাচ্ছে এবং সেটলার বাঙালিদের উস্কে দিয়ে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে সামপ্রদায়িক ঘনার রূপ দেয়ার চেষ্টা চলছে বলে বক্তারা অভিযোগ করেন।
বক্তারা অবিলম্বে নিরীহ জগণের উপর নির্যাতনকারী সেনা সদস্যদের বিরম্নদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে সেনা নির্যাতন বন্ধ করা সামপ্রদায়িক উস্কানি ও সেটলার বাঙালিদের মদদদান বন্ধ করা, গঙ্গারাম মুখ গ্রাম থেকে লুট করা জিনিষপত্র ফেরত দেয়া ও পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনীকে সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের মাধ্যেমে সেনা শাসন অবসানের দাবি জানান।

বার্তা প্রেরক

বাতায়ন চাকমা
দপ্তর সম্পাদক
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ
খাগড়াছড়ি জেলা শাখা।