বিসর্গ ‘ঃ’ , এই বর্ণের প্রচুর অপব্যবহারের কারণে বাংলাভাষা দুষিত হয়ে গেছে, ফলে এ বর্ণটির ভবিষ্যৎ !!
প্রতিক্লাশের ব্যাকরণ বই তথা বিভিন্ন অভিধানে বিসর্গ ‘ঃ’ বর্ণটির ব্যবহারসহ বিরাম চিহ্ন বা সংক্ষেপিকরণের নিয়ম ব্যাপকভাবে দেয়া থাকলেও লেখার ক্ষেত্রে বিষয়টি অবহেলিত। বিশেষ করে সংক্ষেপিকরণের ক্ষেত্রে অর্থাৎ
প্রতিক্লাশের ব্যাকরণ বই তথা বিভিন্ন অভিধানে বিসর্গ ‘ঃ’ বর্ণটির ব্যবহারসহ বিরাম চিহ্ন বা সংক্ষেপিকরণের নিয়ম ব্যাপকভাবে দেয়া থাকলেও লেখার ক্ষেত্রে বিষয়টি অবহেলিত। বিশেষ করে সংক্ষেপিকরণের ক্ষেত্রে অর্থাৎ
এব্রিভিয়েশনে ফুলস্টপ
‘.’ এর কথা বলা হলেও বাংলাভাষায় প্রায়ক্ষেত্রে বিসর্গ ‘ঃ’ বর্ণটি ব্যবহার
করা হয়, যা কোনোকালেই অভিধান বা ব্যাকরণসিদ্ধ নয়। যেমন- মোঃ, প্রাঃ, প্রোঃ,
ডাঃ, লিঃ, খ্রিঃ ইত্যাদি। অথচ এসবক্ষেত্রে মু., প্রা., প্রো. ডা. লি.
খ্রি. হওয়ার কথা। বাংলা বা ইংরেজি যেকোনো ব্যাকরণ পড়লে আমরা দেখতে
পাই-যেকোনো সংক্ষেপিকরণে ফুলস্টপ ‘.’ ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। যেমন- এস.
এস. সি., এইচ. এস. সি., বি. এ., বি. কম., বি. এস-সি.। এসবক্ষেত্রে ‘.’
ব্যবহার না করলেও ভুল হবে না। যেমন- এসএসসি, এইচএসসি, বিএ, বিকম, বিএস-সি।
কারণ এস. এস. সি/এস, এস, সি/ ঝ.ঝ.ঈ/বি,এ লেখাটা পুরোটাই ভুল। এ-এর পরে ‘.’
না দিলে ব্যাচেলর অব আর্টস না হয়ে ব্যাচেলর অব এ হয়ে যায়। এ যুক্তিতে
প্রতিটি স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত তথা স্কুলের বিভিন্ন বইতে প্রায় ভুল নজর
পড়ে।
তবে বর্তমানে জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলোতে এসব নিয়ম তথা সংযুক্ত
শব্দগুলোর দারণ ব্যবহার আশার আলো দেখায়। হতাশা শুধু স্কুল-কলেজ যেখানে সবার
আগে এসব নিয়ম চালু বা শিক্ষার কথা ছিল। শিক্ষকগণ কি প্রাইভেট-টিউশনি ছেড়ে
এসব বিষয়ে নজর দেয়ার সময় পান?
আরও হতাশা বা আশ্চার্যের বিষয় যে, বাংলাতে বিভিন্ন দরখাস্ত, সনদ, প্রত্যায়ন লেখার ক্ষেত্রে অযথা কমা ‘,’ বা দাঁড়ি ‘।’ এর ব্যবহার।
মাননীয় প্রধানশিক্ষক
মাননীয় জেলাপ্রশাসক
মাননীয় অধ্যক্ষ
এভাবে না লিখে
মাননীয়,
প্রধান শিক্ষক
মাননীয়,
জেলা প্রশাসক
জনাব,
প্রধান শিক্ষক
জনাব,
জেলা প্রশাসক
এ কেমন ব্যাকরণ! বোধগোম্য নয়।
আবার ইংরেজি’র ক্ষেত্রে Subject : বা Sub. : এভাবে না লিখে Sub: এভাবে লেখাটা কতটুক সমর্থনযোগ্য?
শুধু
তাই নয়, ইংরেজিতে প্রত্যয়ন বা সার্টিফিকেট লেখার ক্ষেত্রে This is to
certify that Kamal Udding son of Abdul Khaleq, Village-Ahmedpur of
Sonagazi Feni is known to me. এভাবে পুরো বাক্য শেষ করে ‘.’ দেয়া হয় অথচ
বাংলায় লেখার ক্ষেত্রে এ লাইনটাকে যেন জংলী ভাষায় পরিণত করা হয়। যেমন -
প্রত্যয়ন করা করা যাচ্ছে যে, কামাল উদ্দিন, পিতা- আব্দুল খালেক, গ্রাম-
আহমদপুর, থানা/উপজেলা- সোনাগাজী, জেলা- ফেনী। সে আমার পরিচিত/সে অষ্টম
শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিল/সে অত্র প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। এখানে প্রথম বাক্যের
পুরো অর্থই সম্পন্ন হয়নি। এক্ষেত্রে ফেনী’র পরে দাঁড়ি বা সে ব্যবহার করার
কথা নয়।
বাংলাভাষার যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে মাতৃভাষার মর্যাদা বা সবক্ষেত্রে বাংলার প্রচলণ কীভাবে সম্ভব?
এছাড়াও
বিদেশী শব্দ বাংলায় লেখার ক্ষেত্রে ষ, ণ, বা ী-কার ব্যবহার নিষিদ্ধ
হলেও আরো বেশি বেশি ব্যবহার করা হয়। যেমন - ষ্টেশন, ষ্টোর, ফটোষ্ট্যাট,
ম্যাজিষ্ট্রেক, রেজিষ্ট্রেশন, একাডেমী (এসব ক্ষেত্রে স এবং ি হওয়ার কথা)
এ সংক্রান্তে বিস্তারিত পড়ুন ষষ্ঠ শ্রেণির ব্যাকরণ বই অথবা আমার আর একটা লেখা ‘‘ বাংলাবর্ণের উচ্চারণ ও কিছু বাংলাবানান”